ফিলিস্তিনপ্রেমিদের ঢল, স্লোগানে প্রকম্পিত ঢাকা
আপলোড সময় :
১২-০৪-২০২৫ ০২:০৭:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১২-০৪-২০২৫ ০২:০৭:২৮ অপরাহ্ন
মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীতে জনতার ঢল নেমেছে। জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে আশপাশের সব এলাকা। ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে ছোট-বড় মিছিল। তাদের স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে পুরো এলাকা। স্লোগানে প্রেমের আহ্বান ও দ্রোহের গর্জন। তাদের হাতে উড়ছে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা। কারও কারও মাথায় বাঁধা আছে ফিলিস্তিন, বাংলাদেশ বা কালেমা খচিত সাদা পতাকা। এসব মিছিলের স্রোত এসে মিলছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মোহনায়।
তারা এখানে এসেছেন গাজার নিরস্ত্র জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে। বিশ্বজনমত গঠনের লক্ষে। গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলার প্রতিবাদ করতে।
গাজার মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে আজ শনিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। বিকেল ৩টায় এই গণজামায়াতে শুরু কথা থাকলেও সকাল থেকেই আসতে শুরু করেছে জনতা। কোনো মিছিল আসছে বাংলা মোটরের দিক থেকে, কোনোটি আসছে নীলক্ষেতের দিক থেকে, কোনোটি আবার আসছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেট থেকে।
এ সময় তারা ‘গাজাবাসীর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘ইসরায়েলের পণ্য, বয়কট বয়কট’, ‘ফিলিস্তিনে আগ্রাসন, বন্ধ করো করতে হবে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আশপাশ এলাকায় কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা জনতার ভিড় দেখা গেছে। কানায় কানায় পূর্ণ মসজিদ। বেলা দুইটায় এখান থেকে মিছিল বের হয়ে সোহরাওয়ার্দী যাবে। রাজধানীর মুহাম্মাদপুর থেকে আসা মুফতি হাবীবুল্লাহ সিরাজ অবস্থান করছেন জাতীয় মসজিদে। বললেন, ‘ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশে এত বড় সমাবেশ এর আগে হয়নি। আশা করছি, বিশ্বেও এটি সবচে বড় জমায়েত হবে।’
রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থেকে স্কুলবন্ধুদের সঙ্গে মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসেছেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বললেন, গাজার মুসলিমদের ভাইদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। তাদের জন্য মন কাঁদে। খবর দেখলে ভেতরটা কান্নায় ভরে ওঠে। তাদের প্রতি ভালোবাসার টানে এখানে এসেছি।’
নেত্রকোণা থেকে গতকাল রাতেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন মাওলানা আলা উদ্দিন। বললেন, ‘গাজা আমার প্রাণের শহর। সেখানের মুসলিমরা অনেক বছর ধরে দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর নির্যাতনের শিকার। গত দুই বছরে গাজার ৬০ হাজারের বেশি মানুষ শহিদ হয়েছে। আমার মুসলিমদের ভাইদের কথা মনে হলে কিছুই ভালো লাগে না। তাদের জন্য এখানে এসেছি। আল্লাহ তাদের হেফাজত করুন।’
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী সময়ের আলোকে বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুর জেলা থেকে দেড়শ জন এসেছি। আমাদের ফিলিস্তিনের ভাইরা গণহত্যার শিকার হচ্ছে, নিগৃহীত হচ্ছে। এ জেনোসাইড বন্ধ হোক। আমরা চাই, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতি ধিক্কার জানানো হয়।
নরসীংদী জেলা থেকে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে এসেছিলেন পেশায় শিক্ষক সাজ্জাদ মাহমুদ। সময়ের আলোকে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মুসলিমদের প্রতি নৃশংস-অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ফিলিস্তিনের ভাইদের প্রতি জানান দিতে চাই, আমরা তাদের পাশে আছি।
গাজায় চলমান বর্বরোচিত ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠন এবং মানবিক সহানুভূতি জাগ্রত করতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ব্যতিক্রমধর্মী এই গণজমায়েত। বিকেল ৩টা থেকে মাগরিবের পূর্ব পর্যন্ত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে এই মার্চ ফর গাজা কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’।
গাজার নিরস্ত্র মানুষের প্রতি সংহতি জানাতে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এতে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স